রাষ্ট্র দখলের চেষ্টা করেছিলেন মামুনুল হক: ডিসি হারুন
ইমান২৪.কম: হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক রাষ্ট্র, সরকার ও ইসলাম ধর্মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেছেন, ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিলেন মামুনুল।’ মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক তাবলীগের সাদপন্থিদের মারধরের কথা স্বীকার করেছেন এবং জোশের কারণে ওয়াজ মাহফিলের বক্তৃতায় বিশিষ্ট নাগরিকদের মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন বলেও স্বীকার করেছেন।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে নাশকতার ঘটনায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সংশ্লিষ্টা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড চাইবে সিআইডি।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের প্রতিবাদে গত ২৫ ও ২৬ মার্চ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনায় মামুনুলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে, সেসব মামলায়ও তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের একটি মাদরাসা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে।
মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় গতকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) মামুনুলের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালত। রিমান্ডের প্রথম দিনও জিজ্ঞাসাবাদে এই হেফাজত নেতা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ মার্চ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৮ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালন করে হেফাজতে ইসলাম। সেই হরতাল ঘিরে ওইদিন সকাল থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের পশ্চিম মেড্ডা ও সরাইলের খাটিহাতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হেফাজত কর্মীদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে।
এক পর্যায়ে হেফাজত কর্মীরা জেলা পরিষদ কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়, জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ চত্বরে আয়োজিত উন্নয়ন মেলায় আগুন দেয়। এছাড়াও হরতাল সমর্থনকারীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়, ব্যাংক এশিয়া ও ওস্তার আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনে ভাঙচুর, একটি মন্দিরের প্রতিমাও ভাঙচুর করে। শুক্রবার থেকে টানা তিন দিন ধরে হেফাজতে ইসলাম সেখানে সহিংসতা চালায়। সূত্র: ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডি