সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ওপর শকুনীর দৃষ্টি পড়েছে মিয়ানমারের
ইমান২৪.কম: নৈসর্গিক লীলাভূমি এক স্বপ্নদ্বীপের নাম সেন্টমার্টিন। এটি দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র। যা ভ্রমণ পিয়াসীদেরকে মুহূর্তেই আচ্ছন্ন ও মোহাবিষ্ট করে ফেলে। তাই এই দ্বীপের আকর্ষণে প্রতিদিনই হাজারো দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমন ঘটে। এই সাগর দুহিতা আদিকাল থেকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল, এখনও আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে। কিন্তু হালে এই প্রবাল দ্বীপের ওপর শকুনীর দৃষ্টি পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যা আত্মসচেতন মানুষকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের সরকারি ওয়েবসাইটে মুদ্রিত মানচিত্রে এই প্রকৃতি কন্যাকে সেদেশের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। যা মিয়ানমার সরকারের অপ্রতিবেশীসূলভ ধৃষ্টতা হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। মূলত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ও এতদসংলগ্ন ছেঁড়াদ্বীপের মালিকানা নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বা অন্য কোন দেশের সাথে অনিষ্পন্ন মালিকানা বিরোধ অতীতে ছিল না; এখনও নেই। সমুদ্রসীমা নিয়ে দেশেটির সাথে যে বিরোধ ছিল সেটি আন্তর্জাতিক আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে বেশ আগেই।
এরপরও এ দ্বীপ নিয়ে নেইপিডোর দায়িত্বহীন ও উস্কানিমূলক তৎপরতার পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ অতিপুরনো হলেও সেন্টমার্টিন কখনোই বিরোধপূর্ণ ছিল না। তাই এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ না করতে পারলে সেন্টমার্টিনকেও আরাকান ও রোহিঙ্গাদের ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, অতীতে বর্র্মী বর্গীরা স্বাধীন রাজ্য আরাকানকে দখল করে নিয়েছে।
মূলত ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য থাকলেও মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়। ফলে রোসাঙ্গ রাজসভার বাংলা ভাষার কবি-সাহিত্যিকরা যে রাজ্যকে রোসাং ও মুসলিম জনপদ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তা বৌদ্ধ উগ্রবাদীদের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতায় কালের গর্ভে হারিয়ে যায়।
ফলে রোহিঙ্গা মুসলিমরা এখন নিজ দেশেই পরবাসী, বাস্তহারা ও অধিকারহীন এক যাযাবর জনগোষ্ঠী। যাদের রক্তে প্রতিনিয়ত রঞ্জিত হচ্ছে মুসলিম জনপদ। সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীর ভাগ্য কি সেদিকে মোড় নিচ্ছে কী না তা আত্মসচেতন মানুষকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।
সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও জাতিকে বহুধাবিভক্ত করার কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে চর্মচটিকাদের উপদ্রপ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। গণভিত্তিহীন ও দুর্বল সরকারই এর অন্যতম কারণ। কিন্তু একথা মনে রাখতে হবে যে, দেশ কোন দল, গোষ্ঠী বা সরকারের নয় বরং জনগণের। তাই জনগণই দেশের অখ-তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে।