সারাদেশে ধানের শীষে যে জোয়ার উঠেছে তা কেউ রোধ করতে পারবে না
ইমান২৪.কম: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছে বিএনপি, সারাদেশে ধানের শীষে যে জোয়ার উঠেছে তা কেউ রোধ করতে পারবে না। বুধবার সাংবাদিকদের সাথে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচনের দিন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমরা লড়াই করব, বুকে বুক বেঁধে লড়াই করব, প্রয়োজনবোধে বুকে তাজা রক্ত ঢেলে দিব। এরপরও ৩০ ডিসেম্বরের শেষ সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকে দেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে।’ দশ বছর নানা প্রতিবন্ধকতা ও অত্যাচার ব্যবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করছি, আর মুখ বুজে না থেকে শেষ চেষ্টা হিসেবে ৩০ ডিসেম্বরের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে তারেক রহমানের ৫৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব কঠিন সময়ে আছি। কিন্তু এটা অতিক্রম করতে হবে। প্রতিটি জায়গায় বাধা প্রতিবন্ধকতা, অত্যাচার, নির্যাতন। আমরা কি মুখ বুজেই বসে থাকব। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করব না? ১০ বছর চেষ্টা করছি। এখন শেষ চেষ্টা হচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এই সুযোগ একটা এসেছে।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করার জন্য বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিরোধ তৈরি করতে হবে। জনগণের শক্তি দিয়ে দেয়াল তৈরি করে বাধ্য করতে হবে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে।
এর কোনো বিকল্প নেই। এটা আমাদের বাঁচা-মরা আর অস্তিত্বের সংগ্রাম।’ সভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের এলাকায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেককেই চিনতে পারছি। পালিয়ে পালিয়ে না বেড়িয়ে ভোটের জন্য যান। ভোটের দিন সবাইকে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে আসুন। সেখানেই সমস্ত আন্দোলন কেন্দ্রীভূত করেন। তাহলেই আমরা জয়ী হব।’ তারেক রহমানকে উদ্বৃত্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানও সমস্ত মানুষকে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে বলেছেন। তিনি আরও বলেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে সংগ্রাম করব।
৩০ ডিসেম্বরের পরে এ দেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে। এ ছাড়া স্কাইপে বন্ধ ও ধানের শিষ প্রতীক নিয়ে করা রিটেরও সমালোচনা করেন তিনি। স্কাইপে বন্ধের সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘লন্ডনে একজন মানুষ কথা বলে, আর তারা ঢাকায় বসে কাঁপে।’ মান্না বলেন, একদিকে শত শত নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে, অন্যদিকে ভিক্ষুককে ভিক্ষা দিয়ে থ্যাঙ্কিউ পিএম বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ জন্য ধিক্কার জানাতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমেদ সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করার আহ্বান জানান। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারেককে ভালোবাসলে তার প্রমাণ দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। এক লাখ লোক গ্রেপ্তার করলেও মাঠ ছাড়া যাবে না। সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, তারেক রহমানের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখে আওয়ামী লীগ সরকার আতঙ্কিত।
বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে তারককে দেশের বাইরে থাকত হতো না এবং খালেদা জিয়ার সাজা হতো না। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে দেশে পরিবর্তন হবে না বলেও উল্লেখ করেন। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানসহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: অন্য জোটে যাওয়া না-যাওয়া এখনোই উড়িয়ে দেয়া যায় না: এরশাদ