সবকিছুতে নাক গলিয়ে এখন মোদির অবস্থা নাজেহাল ?

ইমান২৪.কম: কংগ্রেস আমলে দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিকে বেশ বেকায়দায় পড়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সরকারি বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরগুলো ওই সময় প্রকাশ্যেই বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিল। মনে হচ্ছিল, সরকারের যেন কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। প্রথম মেয়াদের শেষে সেই একই অবস্থায় পড়েছেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারি ও সাংবিধানিক বিভিন্ন দপ্তরে নাক গলিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি মোদি শাসনের শেষের শুরু দেখা দিচ্ছে? সম্প্রতি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতায় নাক গলিয়ে বিপাকে পড়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজে কোনো সরকারই হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু মোদির সরকারের হাবভাবে মনে হচ্ছে, এবার তার ব্যত্যয় ঘটবেই! ঠিক এমন সময়েই বোমা ফাটিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য্য।

গত ২৬ অক্টোবর তিনি প্রকাশ্যেই বলে দিয়েছেন ঘরের বিবাদের খবর। বিরল বলেন, ‘যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে না, সেটি যেকোনো সময় অর্থনৈতিক বাজারব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করবে। এর ফলে আর্থিক অবকাঠামোয় আগুন লেগে যাবে এবং এমন একদিন আসবে, যখন সেই সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।’ একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা যখন এভাবে সরকারের সঙ্গে মতভেদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন, তখন তা নিয়ে হইচইয়ের অবকাশ আছে বৈকি। কারণ, মোদি সরকার ও আরবিআইয়ের মন–কষাকষির খবর এখন আর গুজব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কথাতেই তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। এখন গুজব রটেছে, শিগগিরই নাকি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর উরজিৎ প্যাটেল পদত্যাগ করতে চলেছেন। আর এই পদত্যাগের একমাত্র কারণ মোদির সঙ্গে দ্বিমত! গুজব রটেছে, শিগগিরই নাকি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর উরজিৎ প্যাটেল পদত্যাগ করতে চলেছেন। আর এই পদত্যাগের একমাত্র কারণ মোদির সঙ্গে দ্বিমত!

ছবি: রয়টার্স গুজব রটেছে, শিগগিরই নাকি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর উরজিৎ প্যাটেল পদত্যাগ করতে চলেছেন। আর এই পদত্যাগের একমাত্র কারণ মোদির সঙ্গে দ্বিমত! ছবি: রয়টার্স মোদি সরকারের দিনকাল আসলেই বেশ খারাপ যাচ্ছে। দিনকয়েক আগেই দেশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) দুই শীর্ষ কর্তার ঝগড়া সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। নিজে কথা বলেও দুই শীর্ষ কর্তার পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ ও মামলা-তদন্তের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো আটকানো যায়নি। শেষে দুই শীর্ষ কর্তাকেই বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠান মোদি। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। সিবিআই পরিচালক অলোক ভার্মা আবার সরকারের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন।

এই নিয়ে অস্বস্তি কাটতে না–কাটতেই চলে এল বিরল আচার্য্যের মন্তব্য। অবশ্য সাংবিধানিক ও ঐতিহ্যগতভাবে স্বাধীন সরকারি সংস্থাগুলোর কাজে হস্তক্ষেপ করা নরেন্দ্র মোদির জন্য নতুন কিছু নয়। ওই তালিকা বেশ লম্বা। বিচারব্যবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন—সবকিছুকেই রাজনৈতিকীকরণ করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের বিরুদ্ধে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এভাবে অযথা নাক গলিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী পদকে যেমন তিনি বিতর্কিত করে তুলছেন, একইভাবে নষ্ট করছেন সরকার যন্ত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আরও পড়ুন: ১৩ জনের প্রাণনাশের পর বাঘিনীকে গুলি করে হত্যা

রংপুর আদালতে বিএনপি-আ’লীগের ব্যাপক সংঘর্ষ

ফেসবুকে লাইক দিন