শিশু নিখোঁজের খবরে পুকুর থেকে অপসারণ হলো কয়েক টন বালু
ইমান২৪.কম: পাবনার বেড়া উপজেলার পেঁচাকোলা গ্রামে যমুনা নদী থেকে তোলা বালু পাইপের মাধ্যমে ফেলা হচ্ছিল একটি পুকুরে। ওই গ্রামে সোমবার সকালে ৬ বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়। কোথাও খুঁজে না পেয়ে এক সময় স্বজনদের সন্দেহ হয়, ভরাটের জন্য পুকুরে ফেলা বালুর নিচে হয়তো শিশুটি চাপা পড়েছে।
এমন খবর জানাজানি হলে পুকুরের কাছে জড়ো হয় এলাকাবাসী। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকেও জানানো হয়। পরে দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় বালু অপসারণ। বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিশুটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ শিশুটি পেঁচাকোলা গ্রামের আযম আলীর ছেলে আসাদুল্লাহ। যে খননযন্ত্রের মাধ্যমে বালু দিয়ে পুকুর ভরাট করা হচ্ছিল, তা জব্দ করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, যমুনা নদীর তীরবর্তী পেঁচাকোলা গ্রামের একটি পুকুর ভরাটের জন্য বেশ কয়েকদিন ধরে বালু ফেলার কাজ চলছিল। এতে কয়েক টন বালু ফেলা হয়। পুকুরটির মালিক গ্রামের ১৫ জন বাসিন্দা। ভরাটের জন্য যমুনা নদী থেকে খননযন্ত্রের মাধ্যমে বাল্কহেডে বালু তুলে তা তীরে নিয়ে আসা হয়। এরপর সেই বাল্কহেড থেকে পাইপের মাধ্যমে পানিসহ বালু পুকুরে ফেলা হচ্ছিল।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে আসাদুল্লাহ নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। একপর্যায়ে আসাদুল্লাহর খেলার সঙ্গী ও প্রতিবেশী সোহাগ নামে এক শিশু জানায়, সকাল ৮টার দিকে তারা পাইপের মাধ্যমে পুকুরে বালু ফেলা দেখছিল। সোহাগ বাড়ি চলে গেলেও আসাদুল্লাহ ঘটনাস্থলেই বসে ছিল।
এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে স্বজনদের সন্দেহ হয় শিশুটি দুর্ঘটনাবশত পানি মেশানো বালুর মধ্যে চাপা পড়ে থাকতে পারে। এরপর এলাকাবাসী ও স্বজনেরা বালু ফেলার ওই স্থানে শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করেন। ব্যর্থ হয়ে বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও পুলিশকে খবর দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কোদাল, বেলচার সাহায্যে ঘণ্টা দুয়েক বালু সরিয়েও শিশুটির খোঁজ পায়নি।
পরে ভেকু মেশিনের সাহায্যে বালু সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৪টা) ভেকু মেশিন ঘটনাস্থলে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছিল। এদিকে যে বাল্কহেড থেকে পাইপের মাধ্যমে বালু ফেলা হচ্ছিল, এমন ঘটনার পর তা নিয়ে পালিয়ে যান পরিচালনাকারীরা।
বেড়া মডেল থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, শিশুটি যে চাপা পড়েছে, তা বালু না সরানো পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তাই বালু সরানোর চেষ্টা চলছে। বেড়া ইউএনও সবুর আলী বলেন, শিশুটিকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। বালু তোলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।