রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবচেয়ে বড় মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল

খেলাফত যুব মজলিস কর্তৃক নির্মিত মধুরছড়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ‘শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. মসজিদ’টি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বলা হচ্ছে সেখানে তৈরি হবে একটি ব্রিজ ও অফিস।

শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. মসজিদ, - রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প

শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. মসজিদ, – রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প

স্থানীয় এক কর্মকর্তার জানান, এখানে রোহিঙ্গাদের সুবিধার জন্য একটি ব্রিজ করা হবে। এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত অফিসারদের জন্য একটি অফিস করা হবে। তিনি আরো বলেন, মসজিদ করার মতো এখানে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। মসজিদ অন্য যে কোথাও হতে পারে।

এদিকে মসজিদ ফেঙ্গে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসশ

মুহাম্মদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল

মুহাম্মদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল

গতকাল (১৭ ই এপ্রিল) বাদ আসর এই বিক্ষোভ মিছিলটি মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম জামে মসজিদ থেকে শুরু হয়ে টাউনহল মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়।

মোহাম্মদপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, এ দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জান মাল হেফাজত করা যেমন আমাদের দায়িত্ব ঠিক একইভাবে তাদের ঈমান আকিদার হেফাজতের দায়িত্বও বাংলাদেশের সরকার ও ষোল কোটি মুসলিম জনতার।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাপ্ত বিদেশি অনুদান দিয়ে রোহিঙ্গাদের থাকা খাওয়ার প্রয়োজন পূরণ করলেও তাদের ঈমান আকিদা রক্ষায় কোনো গুরুত্ব নেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, কিছু দুষ্ট এনজিওর প্ররোচনায় কুতুপালং এর সর্ববৃহৎ মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

মসজিদ পুনঃনির্মাণের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

মসজিদ পুনঃনির্মাণের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

মসজিদ পুনঃনির্মাণের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সমাবেশে হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক।

সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন বলেন, মসজিদ ভাঙার সাহস এনজিওরা কোথায় থেকে পেয়েছে আমরা জানতে চাই। কোনো আলোচনা ছাড়া মসজিদ ভাঙ্গার ফলাফল খুব বেশি ভালো হবে না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, সহ-বাইতুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হাশমতুল্লাহ ফরিদি।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হুসাইন, ঢাকা মহানগরীর প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা শহীদুল ইসলাম, মাওলানা জাহিদুজ্জামান মাওলানা আল আবিদ শাকির।

সমাবেশে বক্তরা মসজিদ ভাঙ্গার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আরও বলেন, আমরা ইতিপূর্বে সরকারের নিকট বিদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য আসা কোন ত্রাণের হিসাব চাইনি বরং আমরা নিজেরাই যথাসম্ভব সাহায্য তাদেরকে করেছি। কিন্তু এখন সরকার এনজিওদের ধোঁকায় পড়ে তাদের দ্বীন ও ঈমান ধ্বংসে সহযোগিতা করছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

সৌদি সফররত মাওলানা মামুনুল হক সোস্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গাক্যাম্পে মসজিদ উচ্ছেদ
কার স্বার্থে?

মাওলানা মামুনুল হক

মাওলানা মামুনুল হক

তিনি আরও বলেন, আজ ১৬ এপ্রিল কুতুপালং রোহিঙ্গাক্যাম্পের জন্য একটি কালো দিন ৷ বাংলাদেশের দূর্ভাগ্যের দিন ৷আর আমাদের জন্য বেদনায় দেহ-মন নীল হওয়ার দিন ৷ দীর্ঘ সাতমাসের অক্লান্ত পরিশ্রম, শরীরের ঘাম আর চোখের অশ্রু এক করে তিলে তিলে গড়ে তোলা হয়েছিল শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক মসজিদ ৷

মধুর ছড়ার খালের পাশে গড়ে ওঠা এই মসজিদটি কুতুপালং ক্যাম্পে “মারকাজ মসজিদ” নামে পরিচিতি লাভ করেছে ৷ এই মসজিদটিকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মুহাজিরদের প্রায় চল্লিশটি মসজিদ, মক্তব ও পাঁচটি মাদরাসার কার্যক্রম চলছে ৷

দৃষ্টিনন্দন নকশা আর সুবিশাল পরিসরের মসজিদটি তাই কুচক্রীদের নজরে পড়তে সময় লাগেনি ৷ ওরা বুঝে নিয়েছে, এই মসজিদকে কেন্দ্র করে দাওয়াত ও তালীমের পরিকল্পিত কাজ চলছে ৷ আর তাই মসজিদটি উচ্ছেদ করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়ে এনজিও গোষ্ঠী ৷ আজ সকাল ১০টায় অতর্কিতে মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলতে আরম্ভ করে ওরা ৷

মসজিদটি যাদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে, তাদেরকে কোনো ধরনের অবগতি কিংবা মসজিদটি সরিয়ে অন্যত্র কোথাও গড়ে তুলবার কোনো সুযোগ না দিয়ে এভাবে হঠাৎ হামলে পড়ার মাধ্যমে দুরভিসন্ধির আলামত স্পষ্ট ফুটে উঠেছে ৷

আমরা এই ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপের তীব্রপ্রতিবাদ জানাই ৷ এই উচ্ছেদ কার্যক্রম মানি না ৷ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি ৷

আমি এই মুহুর্তে ওমরার সফরে পবিত্র বাইতুল্লাহর শহর মক্কায় অবস্থান করছি ৷ কাবার রবের কাছে এই ঘৃণ্য অপতৎপরতার বিরুদ্ধে নালিশ দায়ের করছি ৷ দেশে ফিরে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনে শামিল হব ইনশাআল্লাহ ৷

ফেসবুকে লাইক দিন