যশোরের মাটিকোমরা গ্রামে পুলিশ আতঙ্ক, ইউপি সদস্যের পায়ে গুলি
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাটিকোমরা গ্রাম এখন পুরুষ শূন্য। হয়রানীমূলক গ্রেফতার এড়াতে পালিয়েছে সবাই। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে। এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ গণগ্রেফতারে আটক করা হয়েছে ৪০/৪৫ জন গ্রামবাসী। ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে।
গ্রামবাসী জানায়, ডিবি পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে করে প্রায় ৫/৬ জন মানুষ মাটিকোমরা গ্রামের আজগর আলীর ছেলে একাধিক মামলার আসামি, মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলামের নিকট আসে। তার সঙ্গে নিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করে। এতে করে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ঐ সংঘবদ্ধ চক্রকে ধরার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মাইক্রোবাসে ৬ জন লোক এসে জহিরুলের সঙ্গে মাঠের মধ্যে যেয়ে মাদক সেবন করে। ফেরার সময় গ্রামের কয়েকশ লোক তাদের আটক করে। এ সময় তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে উপস্থিত জনতা তাদের গণধোলাই দেয়। এতে চারজন আহত হয়।
আহতরা হলেন, ডিবি কনস্টেবল মুরাদ (৩৯), শিমুল (৩৫), শাওন (৩০) ও তাদের মাইক্রোবাসের চালক মামুন (৩২)। পরে ঝিকরগাছা ও বাঁকড়া পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে আহতদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ সময় জহুরুল ইসলাম পালিয়ে গেলে তাকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানায় গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে গ্রামবাসী আশ্বস্ত হয় এবং দ্রুত তাকে গ্রেফতার করবে বলে জানায়। মাইক্রোবাস থেকে উদ্ধার হওয়া দেশি অস্ত্র, হকিস্টিক, লাঠি, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশে সোদর্প করে।
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে যশোর ও ঝিকরগাছা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে গণগ্রেফতার শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন (৪০) ও তার ভাইপো আসাদুল ইসলামকে (৩২) পায়ে গুলি করা হয়েছে। তাদের যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া স্থানীয় শত্তকত মোড়লের ছেলে মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪২) ও আমান (৩৫), রউফ খাঁর ছেলে মাবুদ খাঁ (৪৩), সরোয়ার রহমানের ছেলে সাগর (৩০), মৃত আজিজ গাজীর ছেলে ষফি (৩৭), মোজাফ্ফর বিশ্বাসের ছেলে সোহাগ (৩২), নজরুল ইসলাম মোড়লের ছেলে টুটুল (৪৩) এবং শফিকুর রহমান ওরফে গ্যানেট (৪৮), এসএসসি পরীক্ষার্থী টুটুল রহমানের ছেলে সজল (১৫) ও শফিকুর রহমানের ছেলে সোহেলসহ (১৫) ৪০/৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এবং হাফিজুর রহমান হাফু, ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন ও শফিকুর রহমান ওরফে গ্যানেটের বাড়ির জিনিসপত্র, মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে।
স্থানীয়দের দাবি, সন্দেহভাজন ডিবির সদস্যরা ভুয়া ডিবি পরিচয় দেন। তাদের কারণে গ্রামের ডাকাতি হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, চান মিয়া ও জামাল উদ্দীনের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ফলে গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয় এবং তাদের আটক করে গণধোলাই দেয়।
এ ব্যাপারে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: রাজপথে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই: নজরুল
এখন সংকট আরও কঠিন, আরও ভয়াবহ: মির্জা ফখরুল
যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদেরকেই জেলে যেতে হবে : অ্যাডভোকেট সারওয়ার
ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করে সরকার গঠন করবো: বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী