বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে হত্যা

ইমান২৪.কম: ঢাকার আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে মেয়েকে হত্যার পাশাপাশি তার বাবাকে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আহত আকবর আলী মন্ডলকে (৭২) শুক্রবার রাতে উদ্ধারের পর পুলিশ ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেছে। পরে আশুলিয়াতেই সড়কের পাশে পাওয়া যায় মেয়ে জরিনা খাতুনের (৪৫) লাশ। তবে অভিযুক্ত বাসটির সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাসটিকে খোঁজার চেষ্টা চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত জরিনা ছিলেন ক্যান্সারের রোগী।

তার ক্যান্সারের চিকিত্সা চলছিল। আশুলিয়া থানার এসআই বিজন কুমার দাস জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মরাগাং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার খাস কাওলিয়া গ্রামের মহির মোল্লার স্ত্রী। জরিনার বাবা আকবর আলী মণ্ডল বলেন, কয়েকদিন আগে তিনি ও তার মেয়ে জরিনা আশুলিয়ার গাজিরচট এলাকায় জরিনার মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে বাড়ি ফেরার জন্য আশুলিয়ার ইউনিক এলাকা থেকে তারা টাঙ্গাইলগামী একটি বাসে উঠেন। বাসের মধ্যে অল্প কয়েকজন যাত্রী ছিল। আর বাসটি বিভিন্ন স্থান ঘুরে আবার আশুলিয়ার দিকে চলে যায়। এভাবে ঘোরার কারণ জানতে চাইলে বাসের হেলপার ও সুপারভাইজারসহ কয়েকজনের সঙ্গে তদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বাসের চালক, সহযোগী ও সুপারভাইজার তাদেরকে মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়।

এসময় চিত্কার করলে চলন্ত বাস থেকে বৃদ্ধ আকবার আলীকে আশুলিয়া ব্রিজের কাছে ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তিনি টহল পুলিশকে ঘটনা জানালে তারা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মরাগাং এলাকায় মহাসড়কের পাশে রাত ১২টার দিকে জরিনার লাশ খুঁজে পায়। এসআই বিজন বলেন, নিহত নারী কালো রঙের বোরকা পরিহিত ছিলেন। জরিনার শরীরে কোনো ক্ষত না থাকলেও গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাকে ফেলে গেছে খুনি।

পুলিশ বাসটি শনাক্ত করতে পারেনি। এ ঘটনায় বাসের চালক, সহকারী, সুপারভাইজারসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে নিহত জরিনার জামাতা নূর ইসলাম আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান এসআই বিজন। পুলিশ অভিযুক্ত বাসটি ও সংশ্লিষ্টদের খুঁজছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত নারীর বাবা আকবর আলী বয়স্ক হওয়ায় তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বাসটির নামও মনে করতে পারছেন না।

ধারণা করা হচ্ছে বাসটির যাত্রীবেশী সবাই অপরাধী চক্রের সদস্য। দুর্বৃত্তরা কি উদ্দেশ্যে এ অপরাধ সংগঠিত করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিজাউল হক দিপু জানান, বাসটি সনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অভিযান চলছে।

ফেসবুকে লাইক দিন