বন এখন ‘আকাশে’!

ইমান২৪.কম: প্রাচীনকালে মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল অরণ্য। সময়ের বিবর্তনে এক সময় মানুষ ঘর বানাতে শিখল। মানুষের বসবাসের সেই বাড়িতে এখন আধুনিকতার ছড়াছড়ি। কিন্তু প্রকৃতিগতভাবে অরণ্যের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা ছিল তা এখনো অটুট। এ কারণেই প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার জন্য মানুষের ভেতরে আজো কাজ করে এক ধরনের তাড়না।

শহর নামক কংক্রিটের জঙ্গলে বসবাস করতে করতে হাঁফিয়ে উঠেছে মানুষ। কিন্তু চাইলেই তো যখন তখন নাগরিক জীবনের ব্যস্ততা ফেলে জঙ্গলে ফিরে যাওয়া যায় না। তাই এবার নগর জীবনকেই জঙ্গলময় করে তোলার জন্য স্থপতিরা ‘আকাশে’ বন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। শহরের সুউচ্চ ভবনগুলোর বাইরের দিকে হবে এই বন।

‘উলম্ব বাগান’ নামে পরিচিত এ বন প্রসঙ্গে ইটালিয়ান স্থপতি স্টেফানে বোয়েরি বলেন, প্রতিটা গাছ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। প্রতিটা গাছের রয়েছে নিজস্ব জীবনী, নিজস্ব আকৃতি। নাগরিক ব্যস্ততার মধ্যেও যেন সেই গাছের সান্নিধ্য পাওয়া যায় সে জন্য মূলত এই উলম্ব বাগানের চিন্তা। নিজের শহর মিলানের দুটি ভবনের বাইরের দিকে তার তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে এ বন।

আবাসিক দুই ভবনের একটির উচ্চতা ৮০ মিটার এবং অন্যটির উচ্চতা ১১২ মিটার। ১১২ মিটার উচ্চতার বাড়িটি ২৯ তলার মতো উঁচু। অতো উঁচু ভবনের গাছগুলোকে দেখলে যে কারো মনে হবে আকাশেই জন্মেছে গাছ। ভবন দুটিতে রয়েছে এক হাজার প্রজাতির ২০ হাজারের মতো গাছ, গুল্ম ও গাছের চারা।

বাড়ির বাইরের দিকের কাঠামোতে রয়েছে বড় বড় কিছু গাছ। এ ছাড়া প্রতিটা ফ্ল্যাটের বেলকুনি, জানালায় থাকবে ছোট ছোট অনেক প্রজাতির গাছ ও গুল্ম। ঘরের ভেতরেও রয়েছে গাছ। এই ভবনের বাসিন্দারা নির্মল বাতাসের পাশাপাশি জঙ্গল ঘেরা বাড়িতে থাকার প্রশান্তি অনুভব করবে।

সেই সঙ্গে বাড়বে বাড়ির সৌন্দর্য। বাড়ির বাসিন্দা ছাড়াও শহরবাসীকে জোগান দেবে বাড়তি অক্সিজেন। এইভাবে সুউচ্চ ভবনে বন তৈরির সুবিধার কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্থপতি স্টেফানে বোয়েরি বলেন, মিলানের এই ভবন দুটিতে থাকা গাছপালা প্রতি বছর ৩০ টন পর্যন্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে সক্ষম।

একই সঙ্গে শহরবাসীকে বাড়তি ১৯ টন অক্সিজেন জোগান দেবে। তার গবেষণা অনুযায়ী, এই দুটি ভবনে যে পরিমাণ গাছ রয়েছে তা মাটিতে জন্মানোর জন্য অন্তত ২ লাখ ১৫ হাজার বর্গফুট জমি প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, এই ধরনের বন গড়ে তুলতে পারলে উষ্ণায়নও নাকি অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বোয়েরি।

আরও পড়ুন: 

ইন্টারনেট ও স্কাইপ বন্ধ করেও ঠেকানো গেল না তারেক রহমানকে

ফেসবুকে লাইক দিন