ফ্রান্স বিরোধী আন্দোলনে সরব বিশ্ব: নীরব বাংলাদেশের কয়েকটি বড় মাদ্রাসা
ইমান২৪.কম: ফ্রান্সের শার্লি এবদো পত্রিকায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বাক স্বাধীনতার নামে তা সমর্থন করে ইসলামের বিরুদ্ধে দেয়া তাঁর বিদ্বেষমূলক বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা ব্যাপক সরব হলেও অপ্রত্যাশিতভাবে বাংলাদেশের বড় মাদ্রাসাগুলোর বেশ কয়েকটি এখনো নীরব রয়েছে। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে আসেনি কোনো ধরণের বিবৃতিও।
মহানবী সা.-এর অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে যখন সারা বিশ্বের মুসলমানদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাধারণ তৌহিদী জনতাসহ জেনারেল ঘরানার কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-শিক্ষকরা পর্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে, তখন অনেক প্রসিদ্ধ মাদ্রাসাগুলোরও প্রকাশ্য কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ বিষয়টি চরম হতাশাজনক। ফ্রান্সের ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে জুমাবার ভারত জুড়েও বিক্ষোভ হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার বড় ও প্রসিদ্ধ মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে বারিধারা ও রাহমানিয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মাদ্রাসা ছাড়া সব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষই নীরব ভূমিকা পালন করছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, বাবুনগর, জিরি, দারুল মা’রিফ ও লালখানবাজার ছাড়া অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোরও একই অবস্থা। তাঁদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ফ্রান্স বিরোধী কোন মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
চট্টগ্রামের বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান নানুপুরে থেকে এখনও কোনো প্রকার প্রতিবাদ আসেনি। একই দলে সামিল জামিয়া পটিয়াও। ইতোপূর্বেও তাদের এমন বৈরি আচরণের অভিযোগ তুলছেন অনেকে। তবে জামিয়া বাবুনগর ও জামিয়া দারুল মাআরিফের ঘরোয়া প্রতিবাদের সমালোচনা করছেন অনেকে। এ দুটো জামিয়া মাদ্রাসার অভ্যন্তরে কর্মসূচি পালন করে ইমানি দায়িত্ব আদায় করেছেন।
মাদ্রাসার অভ্যন্তরে আন্দোলনের কারণ জানতে কথা হয় দারুল মাআরিফের শিক্ষক মাওলানা মাহমুদ মুজিবের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমরা মাদ্রাসার অভ্যন্তরে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে জামিয়া বাবুনগরকে অনুসরণ করেছি।’ এর আগে অন্যান্য বিষয়ে বাবুনগরকে অনুসরণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মাওলানা বলেন, ‘আমরা জামিয়ার অভ্যন্তরে কর্মসূচি পালন করলেও হেফাজতে বৃহত্তর আন্দোলনগুলোতে শরিক হচ্ছি।’
জামিয়া বাবুনগরের আন্দোলন পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা করছেন খোদ বাবুনগরেরই একাধিক ছাত্র। মসজিদের ভিতর প্রতিবাদ সমাবেশ করায় নিন্দা জানিয়েছেন অনেক সোশ্যাল এক্টিভিটিস।
তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলেন, করোনার কারণে আমাদের চলমান শিক্ষা বর্ষের অনেক সময় চলে গিয়েছে।
সিলেবাস শেষ করার একটা চাপ রয়েছে। এছাড়া আমাদের ছাত্ররা বিভিন্ন ইসলামী দলের ব্যানারে ফ্রান্স বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে। আমাদের পক্ষ থেকে কোন বাধা-নিষেধ নেই। তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামগণ যদি সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি নেন আমরা তাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করব।
মাজারভক্ত আলেমরাও নীরব: রাসুলের আশেক দাবিদার কথিত সুন্নি (প্রকাশ বেদাতি) মাজারভক্তদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ দেখা যায়নি। অতীত ইহিতাসেও তাদের এমন নীরবতা দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কতিপয় বিপদগামী ব্লগার রাসুলের শানে একের পর এক আঘাত করলে তখনও তাদের নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। আল্লাহ ও রাসুল সর্বোপরি ইসলামের উপর কোনো আঘাত আসলে বরাবরের মত তারা পিছিয়ে থাকে।
মাজারভক্তদের প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা আলাউদ্দিন জিহাদি দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা আহমদ শফীকে কটূক্তি করে কারাবরণ করলে তখন তার ভক্তদের কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় আন্দোলন করতে গেলেও ধর্মীয় ইস্যুতে মাঠে ময়দানে তাদের কখনও দেখায় যায়নি।