ফরজ শেষে বিতর নামাজের সময়েই বিস্ফোরণ: দগ্ধ মামুনের বর্ণনা
ইমান২৪.কম: ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। মসজিদে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধ হয়।
পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা প্রথম ব্যক্তি মামুন প্রধান (৩০)।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ সময় মামুন জানান, তিনি একটি গার্মেন্টের শ্রমিক। বিস্ফোরণের সময়ে তিনি গলির ভিতর ছিলেন।
তখন অনেককেই মসজিদের বাহিরে এসে পানিতে ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেন। ভেতরে অনেক কিছুই জ¦লে পুড়ে ছাই হচ্ছিল। ঘটনাটি ঘটে যখন বেশীরভাগ মানুষই এশার ফরজ ও সুন্নতের পর বিতরের নামাজ পড়ছিল।
গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গ্যাসের গন্ধ আগে থেকেই ছিল। হালকা হালকা বের হতো। তবে মসজিদ কমিটি কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা সেটা তার জানা নেই। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার বিষয়ে তিনি জানান, চিকিৎসা ভালমতোই হয়েছে।
কয়েকদিন পরে এসে তাকে ড্রেসিং করিয়ে যেতে বলেছেন। হতাহতদের জন্য দেশবাসী দোয়া করায় তিনি কৃতজ্ঞ। ছাড়পত্র পাওয়া দগ্ধ মামুনের ভায়রা মোসলেম উদ্দিন জানান, মামুনের বাবার নাম মৃত লতিফ। স্ত্রী রুবি বেগমকে নিয়ে তল্লা এলাকায় থাকতেন। তার বাড়ি পটুয়াখালি গলাচিপায়।
নারায়ণগঞ্জে কাউসার গার্মেন্টস চাকরি করতেন তিনি। তার কোনো সন্তান নেই। তিনি বলেন, মামুনের দুই পা, বাম হাত, চুল, ঠোঁট, নাক, বাম কান ও গলায় কিছুকিছু অংশ দগ্ধ হয়েছিল। রবিবার রাতে তাকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম তল্লার ওই মসজিদে গেল শুক্রবার এশার নামাজের সময় বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধাঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই কমবেশি দগ্ধ হন।