পাকিস্তানে প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা ও বিশিষ্ট আলেম মাওলানা সামিকে কুপিয়ে হত্যা
ইমান২৪.কম: পাকিস্তানের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা ও সাবেক সিনেটর মাওলানা সামিউল হককে হত্যা করা হয়েছে। যখন তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে তার বাসভবনের একটি কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তখন তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ খবর নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে। খবর: অনলাইন ডন
এতে বলা হয়, তার ছেলে মাওলানা হামিদুল হক বলেছেন, শুক্রবার তার পিতার গাড়ির চালক হাক্কানি বাইরে যান। ফিরে এসে তিনি দেখতে পান মাওলানা সামিউল হক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন বিছানায়। পাকিস্তানে যখন ধর্মীয়-রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনে উত্তাল করে তুলেছে পরিস্থিতি তেমনই এক সময়ে এ ঘটনা ঘটলো। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এক নারী আসিয়া বিবিকে মৃত্যুদন্ড বাতিল করে তাকে বেকসুর খালাস দেয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট।
অভিযোগ আছে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.)কে নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন আসিয়া বিবি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মাওলানা সামি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জমিয়ত উলেমায়ে ইসলামের একটি অংশের। এ অংশের প্রধান তিনি নিজে। কিন্তু আসিয়া বিবি ইস্যুতে চলমান আন্দোলনে অংশ নিতে পারেন নি তিনি। এমন তথ্য দিয়েছেন তারই ছেলে মাওলানা হামিদ।
ফলে ওই আন্দোলনের সঙ্গে এই হত্যার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। মাওলানা হামিদ বলেছেন, তার পিতাকে অনেক কোপ দেয়া হয়েছে। তাকে কোপানের প্রায় ১৫ মিনিট পরে বাহরিয়া শহরে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় মাওলানা সামির গাড়ির চালক ও প্রহরী।
মাওলানা সামির মুখপাত্র ইউসাফ শাহ বলেছেন, হামলাকারীর পরিচয় বা তাদের উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায় নি। এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নিহতের মৃতদেহ শুক্রবারই নেয়া হয় তার নিজ শহর আকোরা খাত্তাকে। ময়না তদন্ত শেষে শনিবার বিকালে তার দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, মাওলানা সামির বয়স প্রায় ৮২ বছর। পাকিস্তানের খাইবার পখতুনখাওয়া প্রদেশের আকোরা খাত্তাক শহরে অবস্থিত দারুল উলুম হাক্কানিয়া সেমিনারের প্রধান তিনি। দু’দফা তিনি পাকিস্তানের সিনেটর নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রথমবার। এরপর ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত।
এ বছর ২৫ শে জুলাই পাকিস্তানে যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে তিনি বর্তমান ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ দলের সঙ্গে তাল মিলিয়েছিলেন। পাকিস্তানে মাদ্রাসা শিক্ষার সংস্কার ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন রকম কর্মকান্ড- পরিচালনা ও বাস্তবায়নে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চেয়েছিল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তের উভয়পাশে তালেবান সদস্যদের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ছিলেন মাওলানা সামি। গত মাসে আফগানিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল মাওলানা সামির সঙ্গে সাক্ষাত করে দারুল উলুম হাক্কানিয়াতে। এ সময় তারা আফগানিস্তান সঙ্কটের সমাধানে তাকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সংলাপে সন্তুষ্ট নই: ফখরুল
সংলাপে প্রধানমন্ত্রীকে যা বলেছেন ড. কামাল
নিরপেক্ষ আচরণ করলে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে আমাদের আপত্তি নেই: বি চৌধুরী
সংলাপে বিশেষ সমাধান পাইনি -ড. কামাল, ৭ দফার আন্দোলন চলবে: রব
তৃতীয় দিনেও উত্তাল পাকিস্তান, আন্দোলনকারীদের প্রতি ইমরান খানের হুঁশিয়ারি