এখনও আমার শরীরে জামায়াত-শিবিরের নির্যাতনের চিহ্ন আছে: ডা. ফেরদৌস

ইমান২৪.কম: ‘জামায়াত-শিবিরের নির্যাতনের চিহ্ন এখনও আমার শরীরে, দিনের পর দিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ করতে গিয়ে হলছাড়া ছিলাম, কতবার হামলার শিকারও হয়েছি’।

তারপরও আমাকে বলা হচ্ছে আমি ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি মোস্তাক আর কর্নেল রশিদের স্বজন আমার পরিবার। নিউইয়র্কে করোনা চিকিৎসা দিয়ে আলোচিত ডাক্তার কুমিল্লার কৃতি সন্তান ডা. ফেরদৌস অবশেষে দেশে এসেছেন এবং তাকে বনানীতে অবস্থিত নিজ বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ না দিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে হজ্ব ক্যাম্পের সাততলায়। সেখানে বসে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এসব বলেছেন।

তিনি বলেছেন, আমি কোনভাবেই বিএনপি-জামায়াত আদর্শের কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নই। বরং ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে জামায়াত-শিবিরের নির্যাতনের শিকার হয়েছি একাধিকবার। তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যাপারে তিনি বলেন – আমার শরীরে এন্টিবডি আছে এবং আমি আমেরিকার হাসপাতালের সেই সার্টিফিকেটও দেখিয়েছি। তারপরও আমাকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যার কোন যুক্তি নেই।

দেশের টানে মানুষের সেবায় শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে নিউ ইর্য়ক থেকে এসেছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। দেশের ক্রান্তিকালে করোনা প্রতিরোধে কাজ করবেন, মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবেন- এই তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু ১৪ দিনের জন্য তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। কণ্ঠে অসহায়ত্ব নিয়ে ডা. ফেরদৌস বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমিও জানি, কাদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে হয়।

কিন্তু আমার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তার মানে কোনো না কোনোভাবে আমি এখন করোনা প্রতিরোধী, নিশ্চয়ই চিকিৎসকরা বিষয়টি ভালো বোঝেন। আর অ্যান্টিবডির সনদও আমি দেখালাম, তার পরও আমাকে হ্বজ ক্যাম্পে প্রায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে! এটি কেন করা হচ্ছে আমি জানি না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ডা. ফেরদৌস বলেন, জামায়াত-শিবিরের নির্যাতনের চিহ্ন এখনও আমার শরীরে, দিনের পর দিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ করতে গিয়ে হলছাড়া ছিলাম, কতবার হামলার শিকারও হয়েছি। সেই আমাকে একদিনের মধ্যে বানিয়ে ফেলল আমি নাকি ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি? আমার ছোট্ট পরিবারটিকে খুনি মোস্তাক আর কর্নেল রশিদের স্বজন বানিয়ে ফেলল! তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন – বঙ্গবন্ধুর খুনিদের স্বজন তো দূরের কথা, আমার বংশের কারো সঙ্গে খুনি পরিবারের কোনো আত্মীয়তা নেই।

তরপরও কারা আমাকে একের পর এক মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে? কেন আমার চরিত্র হরণে মরিয়া হয়ে উঠেছে? তিনি বলেন – ৩০ বছর বছর আমাকে এখন প্রমাণ করতে হচ্ছে, আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মানুষ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমার পরিবার খুনি মোস্তাকের পরিবারের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই!! আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই ষড়যন্ত্রের আমি বিচার চাই। ডা. ফেরদৌস আরো বলেন, আমিতো কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বাংলাদেশে আসিনি।

এসেছি মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য। করোনা তাণ্ডবকালে একটি দিন আমার কাছে একটি মাসের মতো। এখন একটি দিন আগে পেলে মানুষের সেবায় দিনটি আমি ঢেলে দেব। কিন্তু ১৪ দিন এখানে থাকতে হলে দেশের মানুষের জন্য আমি অনেক কিছুই করতে পারবো না।

এখানে যেভাবে আমাকে রাখা হয়েছে, সেটি অনেক হতাশার, অপমানের। ডা. ফেরদৌস বলেন, অ্যান্টিবডি সনদ থাকার পরও কী কারণে এভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে? নিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যাচার করা হচ্ছে এবং যেভাবে আমার চরিত্রে কালিমা লেপন করা হচ্ছে সেটি খুবই পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। কারা এমনটি করছে, কেন করছে- নেত্রী যেন সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।’ সূত্র : এনটিভি

ফেসবুকে লাইক দিন