‘খাসোগি’কে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন যুবরাজ সালমান

ইমান২৪.কম: সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রকে জানান ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে নিহত সাংবাদিক জামাল খাসোগি এক ‘ভয়ংকর ইসলামী উগ্রপন্থী’ ছিলেন। আজ শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন বোল্টনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় যুবরাজ সালমান খাসোগিকে আন্তর্জাতিক ইসলামী উগ্রপন্থী গোষ্ঠী ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর একজন সদস্য বলে মন্তব্য করেন। আলাপচারিতায় সালমান যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি মিত্রতা অটুট রাখার ব্যাপারেও জোর দেন। সৌদি যুবরাজ অভিযোগ করেন এক ফোনালাপে খাসোগির ব্যাপারে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাস থেকে নিখোঁজ হওয়ার কয়েক দিন পর ৯ অক্টোবর হোয়াইট হাউসের সঙ্গে। সৌদি আরব খাসোগি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করার আগে ওই কথোপকথন হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ। এদিকে সৌদি আরব ওয়াশিংটন পোস্ট ও নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ওই সব প্রতিবেদন প্রত্যখ্যান করেছে।

অন্যদিকে খাসোগির পরিবারও সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে খাসোগির কোনোরকম সম্পক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন লেখায় খাসোগি নিজেও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে জানায় তার পরিবার। বিবৃতিতে বলা হয় ‘জামাল খাসোগি কোনোভাবেই ভয়ংকর কেউ ছিলেন না। এ রকম কোনো অভিযোগ একেবারেই অমূলক।’ অনেকেরই ধারণা, খাসোগি হত্যাকান্ডের সাথে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত থাকতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমন ধারণার কথা জানান। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আল-কাহতানিসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত ও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।

সৌদিকে সহায়তা বন্ধ করছে বিল গেটসের ফাউন্ডেশন সৌদি আরবের একটি দাতব্য সংস্থায় প্রায় সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। মিসক নামের ওিই সংস্থাটি পরিচালনা করতেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। ২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে সৌদি আরব। তবে তারা দাবি করে, সৌদি কর্মকর্তারা খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলেন। তাকে হত্যার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। আর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটি। তবে সৌদি আরবের এমন দাবি মানছে না তুরস্কসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন ইস্তানবুলের চিফ প্রসিকিউটর। গেটস ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র জানিয়েছে, তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে বর্তমান পরিস্থিতি প্রভাবিত করেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, জামাল খাশোগির অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুবই বিব্রতকর। আমরা বর্তমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যুবরাজের ওই দাতব্য সংস্থায় ৫০ লাখ ডলার সহায়তার কথা ছিলো বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসিত জামাল খাশোগি সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী ছিলেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের পর জনসমক্ষে কোনও বক্তৃতা দেননি যুবরাজ। বুধবার বিকালে এক সম্মেলনে প্রথম কথা বললেন তিনি। সৌদি আরব ও তুরস্ক একযোগে কাজ করবে। খাশোগির হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধীর সাজা হবেই। তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’

আরও পড়ুন: বিএনপির সভা-সমাবেশ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে : নৌপরিবহন মন্ত্রী

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমালোচনা করলো জাতিসংঘ

ফেসবুকে লাইক দিন