খাশোগি হত্যা: সিসি ক্যামেরায় ধরা

ইমান২৪.কম: জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনা ধামাচাপায় সহায়তা করতে ইস্তানবুলস্থ সৌদি কনস্যুলেট ভবনের নজরদারি ক্যামেরাগুলো নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল কনস্যুলেট কর্মীরা। খাশোগি হত্যার শিকার হওয়ার পরপরই তৎপরতা চালিয়েছিল তারা। এমনকি কনস্যুলেট ভবনের বাইরে তুর্কি পুলিশের বুথে থাকা ক্যামেরার আলামতও নষ্ট করতে চেয়েছিল তারা। সৌদি কনস্যুলেট কর্মীরা একটি কোড দিয়েছিল, তবে তাতে কাজ হয়নি। তুরস্কের সরকারপন্থী সংবাদপত্র সাবাহ-কে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এসব কথা জানিয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় কনস্যুলেটে খাশোগির প্রবেশের দৃশ্য কনস্যুলেট ভবনে সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান কিংবা অন্য কোনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে আসছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

তবে সৌদি আরবের এমন দাবি নাকচ করে তুরস্ক এরইমধ্যে দাবি করেছে,সরকারের ঊর্ধ্বতনদের ইন্ধনেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিজেদের কাছে প্রমাণ থাকার দাবিও করে যাচ্ছে তুরস্ক। তুর্কি সংবাদমাধ্যম সাবাহ’র এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২ অক্টোবর কনস্যুলেট ভবনের ভেতরের ক্যামেরা নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল সৌদি কর্মীরা। এর কয়েকদিন পর ভবনের বাইরে তুর্কি পুলিশের নিরাপত্তা বুথে স্থাপিত ক্যামেরাও নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল তারা। সাবাহ’র প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৬ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে সৌদি কনস্যুলেট ভবনের এক কর্মী ভবনের বাইরে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকিতে স্থাপিত ভিডিও ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন। ওই কর্মী ভিডিও ব্যবস্থায় একটি ডিজিটাল লক কোড দিয়েছিলেন, তবে তাতে কোনও ক্যামেরার কার্যকারিতা নষ্ট হয়নি। বরং ওই কোডের কারণে ভিডিও ব্যবস্থায় প্রবেশের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

তাতে কনস্যুলেট ভবনে খাশোগিসহ অন্যদের প্রবেশের ফুটেজগুলো দেখতে পাননি সৌদি কর্মীরা। আল জাজিরার প্রতিবেদক অ্যান্ড্রু সিমন্স মনে করেন, যেকোনভাবেই হোক সৌদি কনস্যুলেট কর্মীদের প্রচেষ্টা অপ্রাসঙ্গিক ছিল। কারণ, তুর্কি পুলিশ কোড উন্মোচন করে ফেলেছিল এবং ওই ভিডিও ব্যবস্থার ভেতরে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়েছিল। নষ্ট করার আগেই ভিডিওগুলো উদ্ধার করেছিল তারা। গত মাসে তুর্কি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, কনস্যুলেট ভবনের নজরদারি ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া খাশোগিকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন সৌদি কনস্যুলেটে নিয়োজিত সকল তুর্কি কর্মীকে ছুটিতে রাখা হয়েছিল। গত ২৩ অক্টোবর আঙ্কারায় ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিব এরদোয়ান বলেন, ১৫ সদস্যের সৌদি দল কয়েকদিন আগেই হত্যা পরিকল্পনা করেছি। তিনি দাবি করেছিলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৌদি কনস্যুলেট ভবনে নজরদারি ব্যবস্থা অকার্যকর করা হয়েছিল।

সেসময় এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘প্রথমে সৌদি কর্মীরা ক্যামেরা ব্যবস্থা থেকে হার্ড ডিস্ক সরিয়েছে।’ একে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারা খাশোগিকে হত্যার নিদের্শ দিয়েছে, তার মৃতদেহ কোথায় রাখা হয়েছে-এসব প্রশ্নসহ অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে। ২ নভেম্বর (শুক্রবার) এরদোয়ান খাশোগি হত্যার ঘটনায় সৌদি আরবের ‘উচ্চ পর্যায়ের’ কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করেন। তবে এক্ষেত্রে সৌদি বাদশাহ সালমানকে দায়ী করতে রাজি নন তিনি।

এদিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) জাপান সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে বলেন, ‘এটা নিশ্চিত যে সৌদি আরবের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট দল কারও নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে ইস্তানবুলে খাশোগিকে হত্যার জন্য এসেছিল। আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কে এসব নির্দেশনা দিয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা এ সাধারণ প্রশ্নটিই করছি।’ চাভুসোগলু আরও বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ একটি যৌথ কার্যনির্বাহী দল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমরা তা গ্রহণ করেছি। তবে এ কার্যনির্বাহী দলটিকে ফলপ্রসূ হতে হবে।’ চাভুসোগলু দাবি করেন, খাশোগি হত্যার ঘটনায় এখনও জনগণকে জানানো হয়নি, এমন আরও প্রমাণ তুরস্কের হাতে আছে।

ইমান২৪.কম: আফগানিস্তানে তালেবানের হামলায় অন্তত ২০ সীমান্তরক্ষী নিহত

প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে ১৬ ইসলামিক দলের অঙ্গীকার

ফেসবুকে লাইক দিন