খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে কোনো নির্বাচন হবেনা : ফখরুল
ইমান২৪.কম: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে আসা জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘শতবাধা উপেক্ষা করে আপনারা জনসভায় এসেছেন। গণতন্ত্রের জন্য, দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য উপস্থিত হয়েছেন। আজকের বিশাল জনসমাবেশ প্রমাণ করে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। খালেদা জিয়াসহ যারা আটক আছেন, তাদের মুক্তি না দিলে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জোর করে নির্বাচন করতে চাইলে জনরোষে সরকারের পতন হবে।
আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের শপথ নিতে হবে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করতে হবে।’ শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে সাতদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা না হলে তফসিল বা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
সব জায়গায় আজ শুধু বাধা আর বাধা। এই মাঠে সর্বশেষ দেশনেত্রী খালেদাকে নিয়ে সমাবেশ করেছিলাম, সামনেই বসেছিলেন। আজ তিনি আসেননি, সরকার তাকে কারাগারে আটকে রেখেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখন সময় খুব ভয়াবহ, সংকটপূর্ণ সময়। বাংলাদেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে, কি থাকবে না, স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকবে কি থাকবে না, আমাদের কথা বলার অধিকার, ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে কি থাকবে না; এগুলোই এখন মৌলিক প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। এই স্বৈরাচারী সরকার তাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফিরিয়ে নিয়েছে। যিনি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন, তার ছেলেকে হারিয়েছেন, সেই দেশনেত্রীকে আজ কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ছোট্ট একটি কারাগারের মধ্যে অসুস্থ মানুষটিকে যেভাবে রাখা হয়েছে, সে দৃশ্য দেখে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। যা ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান আমলেও ঘটেনি। এ দেশের মানুষ তার মুক্তি চায়।
আমরা শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলাম। কথা বলেছি। অথচ তিনি কথা রাখেননি। প্রতিদিন গ্রেপ্তার হচ্ছে, মামলা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা কারাবন্দী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীর মুক্তি চাই। অন্যথায় দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার পুলিশ দিয়ে, বন্দুক দিয়ে জনগণের অধিকার ঠেকিয়ে রাখতে চায়। অথচ এদেশের মানুষ সত্যিকার অর্থে মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। দেশনেত্রী বলেছেন, হিংসা চাই না, জনগণের শান্তি চাই।
এই সরকার বৈধ সরকার নয়, আমরা আগেই বলেছিলাম, আগে দেশনেত্রীর মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় সংলাপ সফল হবে না।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান মিনুর সভাপতিত্বে জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব, কর্নেল অব অলি আহমদ বীর বিক্রম, বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: স্কুলের বেতনের টাকা দিতে না পারায় অভিমানে ছাত্রীর আত্মহত্যা
ইরান থেকে আবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করবে জাপান