খালেদার চাইতে জনপ্রিয় নেতা এখন বাংলাদেশে নেই

ইমান২৪.কম: শনিবার ছিল ৩ নভেম্বর জাতির ইতিহাসে এক নির্মমতম শোকের দিন। পৃথিবীর ইতিহাসে রাজনৈতিক নেতাদের হত্যার অসংখ্য ঘটনা আছে। কিন্তু ওভাবে জেলখানার ভিতর নিষ্ঠুর হত্যার কোনো ঘটনা নেই। ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের দিশারি চার জাতীয় নেতাকে নিউ জেলে হত্যা করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান সব থেকে নিরাপদ আশ্রয় জেলে নিহত হন।

তার আগে ধানমন্ডিতে সপরিবারে হত্যা করা হয় দেশের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেখানেও আকাশ-পাতাল ব্যতিক্রম। পৃথিবীর ইতিহাসে বহু রাজা, বাদশাহ, সম্রাট শত্র“র হাতে নিহত হয়েছে। অনেক প্রাসাদ তছনছ করা হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মতো নির্মম হত্যা কোথাও হয়নি। তেমন কোথাও নেতার সঙ্গে নেতার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়নি। সন্তান, আত্মীয়স্বজনকে হত্যা করা হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে হয়েছে।

পাকিস্তানফেরত কর্নেল জামিলকে ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত করে এক ব্রিগেড সৈন্য দিয়ে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের প্রধানকে রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অস্ত্রশস্ত্র, এক ব্যাটালিয়ান সৈন্যসহ হেলিকপ্টার কর্নেল জামিলের নিয়ন্ত্রণে গণভবনেই ছিল। ভদ্রলোক এত অদক্ষ, ব্যর্থ, বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন একজন সৈন্যও ব্যবহার করতে পারেননি। কে সরকারের কাছে প্যারোল চেয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া প্যারোল গ্রহণ করবেন, আমার তো মনে হয় না?

বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ়তাই বিএনপির জিয়নকাঠি প্রাণশক্তি। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে তেমন জনপ্রিয় ছিলেন না। ৮ ফেব্র“য়ারি থেকে আজ ৬ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চাইতে জনপ্রিয় নেতা এখন বাংলাদেশে নেই। আগরতলা মামলায় যেমন আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে পশ্চিম পাকিস্তানে নিতে চেয়েছিলেন জনসাধারণ মানেনি, তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে গোলটেবিলে নিতে হয়েছিল।

নির্বাচনের পরে সেরকম পরিস্থিতি যে হবে, সেটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। কিন্তু নির্বাচনের আগেও তেমন হয় কিনা সেটাই এখন বড় কথা। আর বিএনপি নেতা-কর্মীদের বলি ধৈর্য এবং সাহসের চাইতে এ পৃথিবীতে বড় কিছু নেই। মানুষকে বিব্রত ও বিভ্রান্ত না করে সাধারণ মানুষকে গায়ের জোর না দেখিয়ে মনের জোর এবং প্রসারতা দেখাতে পারলে জনতার জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।

ড. কামাল হোসেনের মতো একজন নেতা জাতির বিবেক তাকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করা আজ আমাদের সবার জাতীয় দায়িত্ব। যাব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের আহ্বানে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে চাই। দেশ থেকে অবিচার-অনাচার, দুর্নীতি চিরতরে দূর করতে চাই। গরিবের সম্পদ যাতে লুটেরা লুটতে না পারে তার জন্য দলমতনির্বিশেষে দৃঢ় পায়ে অগ্রসর হতে চাই। দয়াময় আল্লাহ জনতার বিজয় দিন।

ফেসবুকে লাইক দিন