এবার ড. কামালের করফাঁকির তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে মাঠে নেমেছে দুদক
ইমান২৪.কম: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের করফাঁকি আর অপ্রদর্শিত আয়ের একাধিক অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক টিম তথ্য প্রমাণ সংগ্রহে মাঠে সক্রিয় হয়ে কাজ করছে।
ড. কামাল হোসেনের স্ত্রী হামিদা হোসেনের বিরুদ্ধে লিজ নেওয়া জমিতে নির্মিত ভবন ভাড়া দিয়ে শর্তভঙ্গের অভিযোগ তদন্ত করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ড. কামাল হোসেন সার্কেল ১৬৪, ঢাকা কর অঞ্চল ৮-এর একজন করদাতা। বিভিন্ন করবর্ষে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় দুটি, সিটি সেন্টারে দুটি (যার একটি ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট) এবং আইএফআইসি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টসহ মোট পাঁচটি অ্যাকাউন্টে জমা টাকার ওপর কর পরিশোধ করেছেন।
এনবিআরের তদন্ত দল গণফোরামের সভাপতির নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পান যেটিতে জমাকৃত টাকার ওপর তিনি কোনো কর পরিশোধ করেননি। এমন কি ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে এনবিআরে কোনো তথ্যও দেননি।
এনবিআর সূত্র জানায়, ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ‘ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ নামে করা। এখানে তার পেশাগত ফি জমা হলেও আয়কর রিটার্নে এই আয় দেখানো হয়নি।
২০১২ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ওই অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়। শুধুমাত্র ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সেখানে প্রায় ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা হয়েছে এবং বছর শেষে নগদ স্থিতি ছিল ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা প্রায়।
ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে এই বিপুল পরিমাণ আয় তার পেশাগত ফি, যা আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করেননি এবং সেই ব্যাংক হিসাবটিও তিনি গোপন করেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অপ্রদর্শিত ব্যাংক হিসাব থেকে প্রাপ্ত ব্যাংক স্থিতি ড. কামাল হোসেনের সম্পদ ও দায় বিবরণী হিসেবে বিবেচিত হবে; কিন্তু তিনি সেটি তার কর বিবরণীতে প্রদর্শন করেননি। ওই সম্পদ গোপন করে কর ফাঁকির দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ড. কামালের কর ফাঁকির অভিযোগটির বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। ১৯ নভেম্বর এই আইনজীবীর আয়কর রিটার্নের বিষয়ে জানতে এনবিআর-এ চিঠি পাঠিয়েছে ওই কমিশন।
কর ফাঁকি বা অপ্রদর্শিত অ্যাকউন্টে লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে ড. কামাল হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তিনি। এ বিষয়ে দেশবরেণ্য এই আইনজীবীর ভাষ্য হলো, তার নামে এমন কোনো ব্যাংক হিসাব নেই যেটি তিনি কর বিবরণীতে প্রদর্শন করেননি। যে অ্যাকাউন্টের কথা বলা হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
ড. কামাল হোসেনের স্ত্রী হামিদা হোসেনের নামে সরকারের কাছ থেকে লিজ নেয়া জমিতে ভবন নির্মাণ করে শর্ত ভেঙে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগও ওঠেছে।
গুলশানের ৮০ নম্বর রোডে এনই (আই) ৯১ ব্লকে ১ বিঘা ১২ কাঠা আয়তনের ৫ নং প্লটটি ৭৭ হাজার ৭শ টাকায় ১৯৭০ সালে লিজ হস্তান্তর করা হয় ড. কামালের স্ত্রী হামিদা হোসেনের নামে।
১৯৯৮ সালে ইমারতসহ ওই প্লটটি দুই মেয়ে সারা হোসেন ও দীনা হোসেনের নামে দানসূত্রে নামজারি করা হয় বলে জানা যায়। লিজ গ্রহীতা হিসেবে সারা হোসেন ও দীনা হোসেন ওই প্লটটি একটি দূতাবাসের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।
রাজউক সূত্রগুলো জানায়, শর্ত ভঙ্গ করে আবাসিক প্লট ব্যবহারের পরিবর্তে বাণিজ্যিক স্বার্থে দূতাবাসকে ভাড়া দেয়ার বিষয়টি লিজ দলিলের ৮ ও ১৫ নং শর্তের পরিপন্থী। এ বিষয়ে তাদের (ড. কামালের দুই মেয়েকে) নোটিসও দেয়া হয়েছে। ২৩ অক্টোবর রাজউক-এর সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) স্বাক্ষরিত নোটিসটি লিজ গ্রহীতাদের কাছে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
লিজ নেয়া সরকারি জমির প্লট ভাড়া দেয়া প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, প্লটটি বহুদিন ধরেই ভাড়া দেয়া রয়েছে। এটি বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। এ নিয়ে সরকারের কোনো সংস্থার কাছ থেকে কোনো আপত্তি বা নোটিশ আমরা পাইনি। রাজনৈতিক কারণে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষনেতা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টিতে পদত্যাগের হিড়িক; কার্যালয়ে তালা!
ক্ষমতা হারালে কেউ রেহাই পাবেন না বাছাধন: আইনমন্ত্রী
এসপি-ডিসি সবকিছুই তাদের, সুষ্ঠু নির্বাচন কিভাবে হবে: পার্থ
জামায়াতের মধ্যেও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন : সংবাদ সম্মেলনে নজরুল
গায়েবি মামলায় মনোনয়ন পাওয়া বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন কারাগারে
>ইজতেমা মাঠের দখল পেতে মাও. সাদপন্থীদের সংবাদ সম্মেলন, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা