ইহুদিদেরকে ইসরাইল থেকে বহিষ্কার করে দিচ্ছে সে দেশের সরকার

ইমান২৪.কম: ৩৪ হাজারের বেশি আফ্রিকান উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল। আরবদের পর এবার নিজ জাতি ইহুদিদেরকে ইসরাইল থেকে বহিষ্কার করে দিচ্ছে সে দেশের সরকার। ইহুদিবাদ ছাড়া আর সবার জন্যই ইসরাইলের আচরণ একই রকম নির্মম। তারা এখন আফ্রিকান উদ্বাস্তুদের নিজ দেশে না হলেও তৃতীয় কোনো দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে।অথচ ইসরাইল রাষ্ট্রটিই গঠিত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা উদ্বাস্তু ও গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের নিয়ে। তবে তারা অবশ্যই নির্দিষ্ট ধর্মের ইহুদি। আলজেরিয়া, আলবেনিয়া, তিউনিসিয়ার মুসলিমরাও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইহুদিদের আশ্রয় দেয়ার যেসব নজির স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অমলীন।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার বাহিনীর গণহত্যা থেকে বাঁচতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে ইহুদিরা।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আশ্রয় দিয়েছে ইহুদিদের। ইরানি কূটনীতিক আবদুল হোসেইন সারদারি হাজার হাজার জার্মান ইহুদিকে ইরানি পাসপোর্টে দেশ ত্যাগ করার সুযোগ দিয়েছেন। এগুলো উদাহরণমাত্র। ইউরোপ, আফ্রিকার অনেক দেশই ইহুদিদের জীবন বাঁচাতে আশ্রয় দিয়েছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ছিল এ ক্ষেত্রে কঠোর। সারা বিশ্ব থেকে নির্যাতিত ইহুদিদের জন্য ভূখণ্ড করে দেয়া হয়েছে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে। বিচারমন্ত্রী আয়েলেত শাকেদ তো বলেই দিয়েছেন, ‘ইসরাইল আফ্রিকানদের জন্য কোনো চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠান নয়’।

কট্টর ইহুদিবাদী এ নেতার মতোই বেশির ভাগ লোকের মনোভাব। অথচ এই অভিবাসীরা ইসরাইলের শ্রমবাজারের জন্য বড় সম্পদ হতে পারে। দেশটিতে রয়েছে প্রচুর শ্রমিক সঙ্কট। অভিবাসন ইস্যুটি নিয়ে ইসরাইলের কট্টরপন্থী ইহুদি ও উদাপন্থীদের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব ইহুদিরা নিজেদের ও পূর্বপুরুষের অতীত সম্পর্কে সচেতন তারা চাইছেন ইহুদিবাদকে মানবিক ও দাতব্যবান্ধব হিসেবে পরিচিত করাতে। আরেকটি ভিন্ন চিত্র হচ্ছে, ইসরাইল প্রতি বছরই বিদেশী ইহুদিদের গণহারে আশ্রয় দিচ্ছে। বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে ইহুদিরা চাওয়া মাত্রই ইসরাইলের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। শুধু ২০১৭ সালেই ২৭ হাজার ইহুদি আশ্রয় নিয়েছে দেশটিতে। অর্থাৎ ইহুদি ও অ-ইহুদিদের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন নিয়ম সেখানে।

এক দিকে উদারতা, অন্য দিকে নির্মমতা। নির্দিষ্ট ধর্মের লোক হলেই মিলছে আশ্রয়, আর অন্যদের চলছে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা। যে কারণে ইসরাইল বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত রাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত রাষ্ট্র ইসরাইল।ঘৃণিত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার মূলে রয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জীবাণুযুক্ত অস্ত্র ব্যবহার ইত্যাদি। ইসরাইলের এসব কর্মকান্ডের কারণে দেশটির নাগরিকদের জন্য বয়ে এনেছে অমর্যাদা এবং অসম্মান।

আরও পড়ুন: বিএনপির সভা-সমাবেশ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে : নৌপরিবহন মন্ত্রী

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমালোচনা করলো জাতিসংঘ

ফেসবুকে লাইক দিন