রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার পাশে দাঁড়াল কানাডা ও নেদারল্যান্ডস

ইমান২৪.কম: রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর গণহত্যার বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে লড়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। জাতিসংঘের বিচার আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজেতে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে লড়ার ঘোষণা দিয়েছে এই দুইটি দেশ।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশ দুটি যৌথ বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেয়। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাসোঁয়া ফিলিপ শ্যাম্পে ও নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফ ব্লকের দেয়া যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, গণহত্যায় যারা জড়িত তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে শাস্তি।

অন্য দেশগুলোও যেন, এই ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসে, এ আহ্বান রেখেছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসির) আওতাভুক্ত দেশগুলোকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারের গণহত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে গাম্বিয়া অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ করেছে বলেও জানায় দেশ দুটি। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে গাম্বিয়াকে সহায়তা করার মনোভাব ব্যক্ত করেছিল দুটি দেশই।

এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই যাত্রা আরম্ভ করল তারা। এতদিন গাম্বিয়া একাই লড়ে আসছিল মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। এবার বড় দুই দেশকে তারা পাশে পাচ্ছে। কানাডা ও নেদারল্যান্ডস সব ধরনের সহায়তা করবে বলে জানা গেছে।

প্রয়োজনে মামলার ব্যয় ভারও তারা বহন করতে পারবে। ফলে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেও আসবে গতি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসির) সহায়তায় গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করে।

গাম্বিয়ার অভিযোগে বলা হয়, সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পুড়িয়ে দিয়ে, হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা, আহত ও নারীদের ধর্ষণ করেছে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধরা। এরপর শুনানি হয়।

পরে চলতি বছরের ২৩শে জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন। রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে থাকা ছয় লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে মিয়ানমারকে গণহত্যা রোধ করতে, প্রমাণাদি ধ্বংস করা বন্ধ করতে ও এ বিষয়ে চার মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।

যদিও করোনার কারণে সেই রিপোর্ট বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি আর। তবে আইসিজের ওই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে বড় গলা ঝাড়ছে মিয়ানমার। ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গার বাস বাংলাদেশে। বেশ কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।

ফেসবুকে লাইক দিন