ভারতের কাজ ‘চোরের মায়ের বড় গলা’: ক্ষুব্ধ চীনের বক্তব্য

ইমান২৪.কম: চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ হিমালয়ান সীমান্তে কৌশলগত আউটপোস্ট দখলের জন্য ভারতীয় সেনারা রাতের অন্ধকারে চুপিসারে অভিযান চালানোর কারণে সর্বশেষ যে সংঘাত হয়েছে সেটা বিতর্কিত এলাকায় সেনাদের গতিবিধির সুস্পষ্ট ইংগিত।

ভারতীয় কর্মকর্তা সূত্র এ কথা জানায়। ঘটনা সম্পর্কে অবগত সূত্রটি একে মে মাসে বিরোধ দেখা দেয়ার পর ভারতের প্রথম আক্রমণাত্মক তৎপরতা হিসেবে উল্লেখ করেন। কয়েক হাজার সৈন্য প্রায় ছয় ঘন্টা পাহাড় বেয়ে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পাহাড় চূড়া দখল করে।

লেকটির আকার মোটামুটি সিঙ্গাপুরের মতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, চীনা বাহিনী ভারতীয় ভূখণ্ডে অভিযান চালানোর পাল্টা জবাবে এ কাজ করা হয়। জুনে চীনা সেনাদের হাতে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা যখন কমে আসছিলো তখন ভারতের এই পাহাড় চূড়া দখলের ঘটনা আবারো উত্তেজনা বাড়িয়ে দিলো।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) চীন দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি ভঙ্গ ও একতরফা স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য ভারতকে দায়ি করে। এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য কোন ভারতীয় সেনামুখপাত্রকে পাওয়া যায়নি। চীনা পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হুয়া চুনিং সাংবাদিকদের বলেন, চীনে একটি প্রবাদ আছে যে ‘চোরের মায়ের বড় গলা।’ ভারত ঠিক এ কাজটিই করছে।

গত সপ্তাহান্তে ভারত ও চীনা সেনা কমান্ডারদের দুটি বৈঠক অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দুই পক্ষের কমান্ডাররা বুধবারও কথা বলেছেন। ভারত অবশ্য লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল পার হওয়ার কথা অস্বীকার করে। এই অভিযান ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উপর চীনের নজর রাখায় বাধা দেবে।

বিতর্কিত এলাকায় সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র পাঠাতে এই সড়ক ব্যবহার করে ভারত। মে মাসে অচলাবস্থা শুরুর পর থেকেই ভারত ও চীন সীমান্ত এলাকায় হাজার হাজার সেনা, ট্যাংক, কামান ও জঙ্গিবিমান হাজির করেছে।

কিন্তু সপ্তাহান্তে ভারত যে কাজটি করে তা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায় বলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য জয়দেব রানাদে জানান। তিনি অবশ্য ভারতের তৎপরতাকে রক্ষণাত্মক দাবি করে বলেন, চীন এখন কি প্রতিক্রিয়া দেখায় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তারাও পাল্টা মোতায়েন করলে সংঘাত বেধে যেতে পারে। চীনের মধ্যেও আরো আগ্রাসী তৎপরতা চালানোর ইচ্ছা ক্রমেই প্রবল হচ্ছে। গ্লোবাল টাইমস ও চায়না ইন্সটিটিউট অব কনটেমপরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স-এর এক যৌথ জরিপে দেখা গেছে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন ভারতীয়রা চীনের প্রতি অনেক বেশি শত্রুতা পোষণ করে।

ভারতের উষ্কানির শক্ত জবাব দেয়ার পক্ষে ৯০ শতাংশ মানুষ। ২,০০০ মানুষের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়। শনিবারের ঘটনার পর ভারত জনপ্রিয় গেমিং অ্যাপ পাবজিসহ ১১৮টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে। এর আগে জনপ্রিয় টিকটকসহ ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন