ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল এক বোনের দেহ, মেঝেতে পড়ে ছিল আরেক বোনের লাশ
ইমান২৪.কম: রংপুরে শয়নকক্ষ থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরা হলেন, খলিফাটারী মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার মীম (১৬) ও বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া (১৪)। তারা সম্পর্কে চাচাতো বোন।
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নগরীর গণেশপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবারের সদস্য, পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, গণেশপুর এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মমিনুল ইসলামের তৃতীয় স্ত্রী নিজ ছেলেকে নিয়ে দু’দিন আগে কুড়িগ্রাম উলিপুরে বাবার বাসায় যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মমিনুল প্রথম স্ত্রীর সন্তান মেয়ে জান্নাতুল মাওয়াকে একা বাড়িতে রেখে সৎ মাকে আনতে কুড়িগ্রাম যায়। প্রতিবারের মত বৃহস্পতিবার জান্নাতুল তার চাচাতো বোন সুমাইয়া আক্তার মীমকে নিজ ঘরে রাত্রি যাপনের জন্য নিয়ে আসে। রাত ৮টার দিকে মীম জান্নাতুলদের বাড়ি যায়।
এরপর শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘরে কোন সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় মীমের মা ঘরে গিয়ে দেখে এক কক্ষে তার মেয়ে মীম ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। অপর ঘরে জান্নাতুল মেঝেতে পড়ে রয়েছে। মেয়েকে ঝুলে থাকতে দেখে মীমের মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।
খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন, আবু বক্কর সিদ্দিক, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শহিদুল্লাহ কাওসারসহ কোতয়ালী থানা, গোয়েন্দা শাখা ও বিশেষ শাখার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এদিকে দু’বোনের এক সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনায় রহস্যের জট বেধেছে এলাকাবাসীর মনে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একটানা মুষলধারে বৃষ্টিপাত, ফাঁকা ঘরে দু’বোনের অবস্থান, শয়নকক্ষে দু’বোনের মৃতদেহ পড়ে থাকা, ঘরের দরজা খোলা পাওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করছেন তারা।
মনের ক্ষোভে আত্মহত্যা নাকি একলা ঘরে হত্যাকাণ্ড এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। এলাকাবাসী নাজিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে আমি এসে দেখলাম জান্নাতুল মাওয়া মেঝেতে পড়ে আছে। তার গলায় কাটা দাগের মত রয়েছে।
নাকের মধ্যে রক্ত ছিল। পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তা বেরিয়ে আসুক। মীমের বাবা দর্জি মোকসেদুল ইসলাম বলেন, মীমের মায়ের চিৎকারে ছোট ভাইয়ের ঘরে গিয়ে দেখি দু’মেয়ে দু’ঘরে মৃত অবস্থায় রয়েছে। রাতে কি হয়েছে আমি বলতে পারবো না। আমি চাই আমার মেয়ে কেন মারা গেল তার প্রকৃত রহস্য পুলিশ উদ্ঘাটন করুক।