‘আমার পুতে যাইবোগা যানলেগো মসজিদে যাইতে দিতাম না’: মায়ের আহাজারি

ইমান২৪.কম: মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার পর মোবাইল ফোনে কথা বললেও এখন ছেলের সন্ধান পাচ্ছেন না বলে দাবি এক নারীর।

তাকে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে একপর্যায়ে হাসপাতালের সামনে এভাবেই আহাজারি শুরু করেন তিনি। তিনি বলেন, বাবারে, তোমারে কত কষ্ট কইরা মানুষ করলাম, এখন তোমার কী হইলোগো।

আমার পুতে যাইবোগা যানলেগো মসজিদে যাইতে দিতাম না, আমার কাছেই রাখতাম। দুপুরেও নামাজ পইড়া আইসা আমার সঙ্গে ভাত খাইলো। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে মর্জিনা নামের ওই গার্মেন্টস কর্মী জানান, তার বাড়ি চাঁদপুর মতলব উপজেলায়।

মাইনুদ্দিনের বাবার নাম মৃত মহসিন। স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে সে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট মাইনুদ্দিন। তিনি বলেন, শুক্রবার রাতে মাইনুদ্দিন ওই মসজিদে যায় নামাজ পড়তে। এরপর রাতে যখন বিস্ফোরণের খবর শুনতে পান, তখন থেকে আর তাকে খুঁজে পাচ্ছি না।

শুক্রবার রাতেও বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছিলাম। মাইনুদ্দিনের খালাতো বোন সুরাইয়া আক্তার বলেন, আমরা রোগী পাইতাছি না, কাল থেকে রোগী বিচরাইতাছি (খুঁজতেছি), পাইতাছি না। ১২ বছরের একটা বাচ্চা, কাল রাতে ফোনে কথাও বলছি তার সঙ্গে এইহানকার এক কর্মচারীর ফোন দিয়া।

আমারে বললো- আপা আমারে ব্যান্ডিজ (ব্যান্ডেজ) কইরা রাখছে; আমার শরীরে অনেক কাইটা গেছে। এরপর হাসপাতাল থিকা রাইতে বাসায় গেছিগা। আজ সকালে আসছি, আইয়া গেটের ভেতরে রোগীর নামের তালিকা নিছে। পরে ৫ তলায় গেছি।

সুরাইয়া আক্তার বলেন, এক লোক আইসা বলতাছে- মাইনুদ্দিন ভালো আছে, শুয়ে আছে। এখন আবার দেখতে গেছি, বলতাছে- এইটা মাইনুদ্দিনের লাশ; কিন্তু ওইটা মাইনুদ্দিনের লাশ না। মাইনুদ্দিন দেখতে হালকা-পাতলা, অনেক ছোটমোট শরীর।

আর যার লাশ দেখাইতাছে, সেতো বড় মানুষ। এখন কেউ আমাগো কোনো সমাধান দিতাছে না; খালি ঘুরতাছি।

ফেসবুকে লাইক দিন