আজ সংলাপ ভেঙে গেলে রাজপথে আর না ভোটযুদ্ধ
ইমান২৪.কম: সংবিধান না রাজপথ কোন পথে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান? এ প্রশ্ন দুয়ারে দাঁড়িয়েছে। ঘড়ির কাঁটা দ্রুত ঘুরছে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে। দেশবাসী গভীর আগ্রহ নিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাহেন্দ্রক্ষণে তাকিয়ে আছেন গণভবনের দিকে। এক কথায় দেশবাসীর দৃষ্টি এখন গণভবনে।আজ বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের শেষ পর্ব ভেস্তে গেলে কোনো সমঝোতা না হলে রাজনীতি কি রাজপথের আন্দোলন না ভোটযুদ্ধে গড়াবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেনের দেওয়া চিঠিতে সংলাপের যে দরজা খুলে দিয়েছিলেন তাতে রাজনীতিতে চাঞ্চল্যই আসেনি, জনমনে যে আশার আলো দেখা দিয়েছিল তা এখন নিভতে বসেছে। সরকার সংবিধান থেকে একচুল না নড়ার নীতিতে অটল থেকে সংলাপ শেষ করতে যাচ্ছে। যে স্বস্তি এসেছিল সেখানে নতুন করে উদ্বেগের কালো ছায়া দেখা দিয়েছে। একের পর এক রাজনৈতিক সংলাপ শেখ হাসিনার উষ্ণ আতিথেয়তার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আলাপ-আলোচনা আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে হলেও ভোটযুদ্ধ সামনে রেখে দুই পাল্লায় বিভক্ত রাজনৈতিক শক্তি এখন মুখোমুখি। যদিও এর আগে এ তিনটি ব্যাপারে মহাজোট অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। এমনকি সরকার থেকে চলমান সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা বলেছে, সেখানে বুধবারের দ্বিতীয় দফার সংলাপে ঐক্যফ্রন্টকে ছাড় দেবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ছাড় দিলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বর্তমান সরকারের টেকনোক্র্যাট কোটার মন্ত্রীদের পদত্যাগ করাতেন না। অর্থাৎ সরকার ঐক্যফ্রন্টের এ তিন দফাও সংবিধানের দোহাই দিয়ে মানছে না। খালেদা জিয়াকে প্যারোলে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে দিয়ে ও রায় স্থগিত করে তাকে মুক্তি এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেবে না। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি সরকার কোনোমতেই গ্রহণ করবে না বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
এদিকে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। সেখানে সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার অনুরোধ জানিয়ে এসেছে। যদিও নির্বাচন কমিশন ৮ নভেম্বর বুধবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার ও ঐক্যফ্রন্ট যদি যৌথভাবে অনুরোধ না জানায় তাহলে নির্বাচন কমিশন কখনই তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে না। আর নির্বাচন পিছিয়ে একদিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঝুঁকি অন্যদিকে সরকারবিরোধী ঐক্যফ্রন্টকে গণআন্দোলন গড়ে তোলা বা নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার মতো সুযোগ যে দেবে না, সেটি চোখ বন্ধ করে বলা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তিন দফায় সরকারের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ ভেঙে গেলে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটবে নাকি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে ডিসেম্বরের ভোটে অংশগ্রহণ করবে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় একদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট যেমন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তেমনি ঐক্যফ্রন্টও মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষায় সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দুই মহাশক্তির ভোট লড়াই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
এমনি পরিস্থিতিতে গণআন্দোলনে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দাবি আদায়ের মতো আলামত এখন ঐক্যফ্রন্টের অনুকূলে নয়। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছিলেন, এবার বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবেন না। এ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত সরকার ঐক্যফ্রন্টের কাছে নত হয়ে সমঝোতায় না এলে ভোটযুদ্ধের চ্যালেঞ্জই গ্রহণই করবে। দেশের মানুষ এখন কার্যত নির্বাচনমুখী। বিএনপির প্রার্থীরাও ভোটের মাঠে নেমে গেছেন। শেখ হাসিনা দলীয় এবং আসন সমঝোতা অনেকটাই করে ফেলেছেন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দুই শক্তির ভোট লড়াই কি অনিবার্য? ঐক্যফ্রন্ট করতে গিয়ে বিএনপি জামায়াতকেই ছেড়ে আসেনি,
একুশের গ্রেনেড হামলার রায়ে দন্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অনেক নেতা যাবজ্জীবন থেকে ফাঁসির রায়ে দন্ডিত হলেও ঐক্যফ্রন্ট এটিকে তাদের ইস্যু করেনি। তবে বিএনপি শক্তিনির্ভর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভোটযুদ্ধে এলেও আন্দোলনের একটি প্রবল ঝাঁকুনি দেবে আর সরকারও সেখানে হার্ডলাইন নেবে। বুধবার নাটকীয় সমঝোতা না ঘটলে শেষ পর্যন্ত ভোটের লড়াই কোন পথে গড়ায় সেটিই দেখার বিষয়।
ইমান২৪.কম: আফগানিস্তানে তালেবানের হামলায় অন্তত ২০ সীমান্তরক্ষী নিহত
প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে ১৬ ইসলামিক দলের অঙ্গীকার