অবশেষে জানা গেল দুই কারণে খেতে চাননি ফখরুল
ইমান২৪.কম: ড. কামালের ঐক্যফ্রন্ট যেদিন সংলাপের প্রস্তাব রেখে চিঠি দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, সেদিনই ত্বরিত সাড়া দিলেন তিনি। শেখ হাসিনা সংলাপে সম্মত হয়েছেন, উত্তুরে হাওয়ার শীত শীত আমেজে নিমেষে তুমুল উত্তাপ নিয়ে এলো এ খবর। উত্তেজনার প্রাথমিক আমেজ কাটতেই বর্শার মতো ভাসতে লাগলো তিনটা শব্দ। কবে কখন কোথায়? তিনটি শব্দ ছুটে বেড়াতে লাগলো দেশময়। কবে কখন কোথায় হবে এই সংলাপ? দেশময় শুধু নয়, বলতে হবে বিশ্বময়। যেখানেই বাংলাদেশিরা আছেন, সেখানেই দেশের রাজনীতি নিয়ে তীব্র আগ্রহ। তো ওই তিন শব্দের প্রশ্নগুলোর জবাবও মিলে গেলো রাতারাতি।
জানা গেলো, নভেম্বরের পয়লা দিনে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণভবনে সংলাপ বসবে। আরো জানা গেলো, আলাপ শুধু নয়; প্রধানমন্ত্রী নৈশভোজের আমন্ত্রণও দিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছে পছন্দের মেন্যুও জানতে চেয়েছেন। এবার রিপোর্টারদের পা আর ফোনের ওপর চাপ বাড়লো। জানতেই হবে, খাবারের মেন্যু কী। জানা গেলো, ছাপাও হলো। কেউ কেউ এও জানালেন, ঐক্যফ্রন্ট কথা বলবে কিন্তু খাবে না। আর বিএনপি নেতারা নাকি খাবেনই না।
গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক গরম খবর পেলেই খাবেন, তাই খবরকে গরম করতে গিয়ে সংবাদকর্মীদের পায়ের তালু আর মোবাইল ফোন গরম হতে থাকলো। এক পর্যায়ে খবরের গরমে মাথার তালু অবধি গরম হয়ে থাকলো সংলাপ শুরুর পূর্ব পর্যন্ত। অবশেষে সেই প্রতীক্ষিত সংলাপ। রুদ্ধদ্বার আলোচনা শুরুর আগে টিভির লাইভে মানুষ যা দেখলো, তার পুরোটাই খাওয়া-দাওয়ার ছবি। শুরুতে পরিবেশিত বাদাম, চিপস আর পানীয়ের সদগতি করতে ব্যস্ত ছিলেন সবাই। তারপর ক্যামেরা আউট। আর তারপর কী হলো, সে নিয়ে শুরু হলো আঠারো পদের কথাবার্তা। এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিলো, মির্জা ফখরুল নাকি শেষতক কিছুই খাননি। এটা সত্য, তিনি খেতে চাননি। কিন্তু কেন?
কারণ জানতে একটু সময় লেগেছে বৈকি। দুটি কারণে খাননি বিএনপি মহাসচিব। শুধু প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখার জন্য একটি আইটেমের একটি পিস মুখে তুলেছেন। তার না খাওয়ার প্রথম কারণ ছিলো, বেগম জিয়ার সাজাবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে সারাদেশে গণঅনশন চলছিলো। দলের এমন একটি কর্মসূচি চলাকালে মহাসচিব আনন্দিত চেহারায় খানাপিনা করছেন, এটা মানানসই নয়।
দ্বিতীয়ত, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী একবার অনশন করা অবস্থাতেই বিশাল খানাপিনার ‘পাতানো’ জালে ধরা পড়েছিলেন। সেই ছবিটি টিভি ও পত্রিকায় যাওয়ার পর খুব বিব্রত হয়েছিলেন মওলানা। জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতে তাকে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছিলো। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মওলানা ভাসানীর যোগ্য অনুসারী। তিনি সংলাপে গিয়ে মওলানার সেই বিশেষ ঘটনাটি মনে রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শিবিরের কার্যালয়ে বিস্ফোরণ; ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ